হবিগঞ্জ জেলার লাখাই থানার মোড়াকরি গ্রামে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে ৩রা এপ্রিল ওস্তাদ বাবর আলি খানের জন্ম।
তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসির নগর থানার ফান্দাউক উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেন।
একসময় হবিগঞ্জের সাংস্কৃতিক জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন বাবর আলী খান। সঙ্গীত প্রেমী এই মানুষটি সংস্কৃতিসেবীদের তালীম দিতে গিয়ে ভুলে যেতেন নাওয়া-খাওয়ার কথা। এমন ত্যাগী সঙ্গীত শিল্পী খুব কমই জন্ম নিয়েছে। হবিগঞ্জবাসী তাঁকে ওস্তাদজী হিসাভে জানত।
ওস্তাদ বাবর আলি খানের পিতা দুদু খাঁও ছিলেন সঙ্গীত শিল্পী। পিতার কাছ থেকে উৎসাহ পেয়ে তিনি সঙ্গীতে হাতে খড়ি নেন।পিতা দুদু খাঁ পুত্রের মধ্যে সঙ্গীতে প্রবল আগ্রহ দেখে শৈশবেই নিয়ে যান ওস্তাদ আয়েত আলী খান, সুর সম্রাট ওস্তাদ আলীউদ্দিম খান প্রমুখের কাছে। এদের কাছে দীর্ঘদিন তিনি সঙ্গীতে শিক্ষা গ্রহন করেন। বাবর আলি খান যখন যুবক তখন প্রেমে মত্ত হয়ে , শেখার নেশাই একসময় ছুটে যান কলকাতায়। সেখানে সঙ্গীতে শুরু ‘মহেন্দ্র চন্দ্র দে’ তাকে তালিম দেন।
১৯৩৫ সালে বাবর আলি খান ফিরে আসেন হবিগঞ্জ। এসে যোগ দেন স্থানীয় আর্ট কাউন্সিলে। হবিগঞ্জের তৎকালীন সঙ্গীত শিপ্লীরা ওস্তাদ আলি খানের কাছ থেকে দীক্ষা নেন। ষাটের দশকে সিলেট বেতার উদ্ভোধনের সময় তাঁর ডাক পরে। সেখানে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর পূর্ব পর্যন্ত মিউজিক প্রডিউসার হিসাভে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একাধারে সেতার,এস্রাজ,সরোদ,গীটার,দোতারা,বেনজু,সানাই,তার সানাই,তব্লা,টীকারা,হারমোনিয়াম বাজাতেন। কণ্ঠশিল্পী হিসাভে তিনি নজরুল গীতি, ঠুমরী, খেয়াল নিয়মিত পরিবেশন করতেন।
স্বাধীনতা লাভের পর ওস্তাদ বাবর আলি খান গড়ে তোলেন সঙ্গীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুরবিতান। সুরবিতান ছেড়ে অনেক ভাল প্রতিষ্ঠানের যাওয়ার প্রস্তাব পেয়েছিলেন তিনি। ১৯৭৬ সালে টেলিভিশনে সাংবাদিক হেদায়েত হোসেন মোরশেদ উপস্থিত সজনে বিজনে অনুষ্ঠান অংশগ্রহন করেন।