সুবীর নন্দী
জন্ম-মৃত্যু : ১৯৫৩-২০১৯
সুবীর নন্দী একজন বাংলাদেশী সুনামধন্য জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী।
জন্ম এবং পারিবারিক জীবন
সুবীর নন্দী হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং থানায় নন্দী পাড়া নামক মহল্লায় এক সম্ভ্রান্ত সঙ্গীত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। সুবীর নন্দীর পিতা তেলিয়াপাড়া চা এস্টেটের চিকিৎসক ছিলেন। সেখানে তিনি ছোটবেলা থেকেই অন্য নয় ভাইবোনের সঙ্গে ওস্তাদ বাবর আলী খানের কাছে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তালিম নিতেন। তবে সঙ্গীতে তাঁর হাতেখড়ি ঘটে মায়ের কাছেই। তাঁর মা-ও খুবই চমৎকার গান করতেন কিন্তু পেশাদারী সঙ্গীতে আসেননি।
সঙ্গীত জীবন
বাংলাদেশের আধুনিক সঙ্গীতের অবিস্মরণীয় এই কণ্ঠশিল্পী, আধুনিক গানের পাশাপাশি কণ্ঠ দিয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় প্লেব্যাকে। তাঁর কণ্ঠের অনেক গান বাংলার ঘরে ঘরে, প্রতিটি জনপদে বিপুল সমাদৃত হয়েছে। তাঁর গাওয়া গান এদেশে জনপ্রিয়তার আলাদা বলয় তৈরী করেছে বলে মনে করেন বিশিষ্টজনেরা। তিনি রেডিও, টিভি এবং মঞ্চে এখনো গেয়ে চলছেন নিয়মিত। সম্প্রতি বেশ কিছু সঙ্গীতভিত্তিক অনুষ্ঠান উপস্থাপনার পাশাপাশি একটি রিয়েলিটি শো’র প্রধান বিচারকের দায়িত্বও পালন করছেন। সুরকার হিসেবে বেশ কিছু গান বেঁধেছেন নিজের জন্য। বর্তমানে গান তৈরী করছেন তপন চৌধুরী এবং শাকিলা জাফরের জন্য। বয়সের সীমারেখা পেরিয়ে আধুনিক সঙ্গীতের পাশাপাশি তিনি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত, ভজন, কীর্তন এবং পল্লীগীতিতেও যথেষ্ট পারঙ্গম।Sobir Nandi
নিজের অজান্তেই ছোটবেলা থেকে গান শুনতে শুনতে উপমহাদেশের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী পঙ্কজ মল্লিক, সায়গল, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, জাগজিৎ সিং প্রমুখের অনুরক্ত ভক্তে পরিণত হয়েছিলেন। ১৯৭০ সালে সুবীর নন্দীর রেকর্ডকৃত প্রথম গান মোহাম্মদ মুজাক্কেরের কথায় এবং ওস্তাদ মীর কাসেম সুরারোপিত ‘যদি কেউ ধূপ জ্বেলে দেয়’। এছাড়া তার গাওয়া উল্লেখযোগ্য জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে, আমি বৃষ্টির কাছ থেকে কাঁদতে শিখেছি, এক যে ছিল সোনার কন্যা, কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো, হাজার মনের কাছে প্রশ্ন রেখে, দিন যায় কথা থাকে প্রভৃতি। তিনি তাঁর গানের স্বীকৃতি স্বরূপ পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন।
সম্মাননা
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (মহানায়ক – ১৯৮৪, শুভদা – ১৯৮৬, শ্রাবণ মেঘের দিন – ১৯৯৯,মেঘের পরে মেঘ – ২০০৪)।জাপানের ‘প্রবাস প্রজন্ম সম্মাননা’ গ্রহণ করেছেন সঙ্গীতশিল্পী সুবীর নন্দী